হযরত আবু যর
গিফারী (রাযিঃ)-এর মা এর ইসলাম গ্রহণ ?
হযরত আবু যর
গিফারী (রাযিঃ) রাসূল (সাঃ)-এর একজন প্রসিদ্ধ সাহাবী। যখন রাসূল (সাঃ)-এর নবুওয়তের
কথা চতুর্দিকে ছড়িয়ে পড়ল এবং কাফেররা তাকে মিথ্যা জানল, তখন তিনি রাসূল (সাঃ)-এর
বিষয়টা যাচাই- বাছাই করার জন্য প্রথমে বড় ভাইকে মক্কায় পাঠালেন, পরে আরও ভালভাবে
জানার জন্য নিজে মক্কায় এলেন। সবকিছু দেখে শুনে ইসলাম গ্রহণ করলেন । যখন তিনি বাড়িতে
ফিরে গিয়ে সমস্ত কাহিনী বর্ণনা করলেন এবং তিনি ও বড় ভাই উভয়ে মিলে তাঁদের মাকে দাওয়াত
দিলেন, তখন বললেন, তোমরা যে ধর্ম গ্রহণ করেছ, আমিও তা অস্বীকার করি না। আমি সেই ধর্ম
কবুল করে নিলাম । আমি মুসলমান হয়ে গেলাম।
নতুন নতুন আপডেট পেতে গুগল নিউজ ফলো করুন
ফায়দা : এ
ঘটনা থেকে আমাদের শিক্ষণীয় হল সত্য কথার সন্ধান পাওয়ার পর আর বাপ-দাদারা কি করে আসছে
তা ধরে বসে থাকা যাবে না। যেমন আবূ যর গিফারীর মাতা সত্য ধর্মের সন্ধান পাওয়া মাত্র
বাপ-দাদার ধর্ম ত্যাগ করে সত্য ধর্ম গ্রহণ করেছেন। আমাদেরও উচিত শরীয়তের কোন সহীহ
মাসআলা-মাসায়েল জানতে পারলে তা মেনে নেয়া। বাপ-দাদারা বা পূর্ব পুরুষরা কি করে আসছে
বা সমাজে কি রছম চলে আসছে, তা না দেখা । অনেক সময় দেখা যায়, বাপ-দাদারা একটা রছম
করে আসছে অথচ সেটা ঠিক নয় জানার পরও আমরা তা গ্রহণ করিনা বরং বলে থাকি, বাপ-দাদা এবং
মুরব্বীরা করে আসছে, তা ছাড়া যায় না। এরূপ বলা বা এরূপ করে যাওয়া ঠিক নয়। যে কোন
সহীহ কথা বা সহীহ মাসআলা শোনার সাথে সাথেই তা মেনে নেয়া উচিত। বাপ-দাদারা করে আসছে,
তাই করতে হবে, এটা ছিল কাফেরদের যুক্তি। তারাই বাপ-দাদারা করে আসছে এই যুক্তিতে মূর্তি
পূজা করত।
আরও জানুনঃ মেয়েদের ডিম্বাণু বড় করার উপায় ? কি কি খাবার খেলে ডিম্বাণু বড় হয় ?
হযরত আবূ হুরায়রাহ (রাযিঃ)-এর মা এর ইসলাম গ্রহণ ?
হযরত আবূ হুরায়রাহ
(রাযিঃ)-এর মা
হযরত আবু হুরায়রাহ
(রাযিঃ) রাসূল (সাঃ)-এর একজন বিশিষ্ট সাহাবী ।
তিনি তাঁর মাকে প্রায়ই ইসলাম ধর্ম কবূল করার জন্য বলতেন। কিন্তু তিনি মানতেন না। একবার তার মা ইসলাম সম্পর্কে এমন একটা উক্তি করে بہشتی বসলেন যে, হযরত আবূ হুরায়রাহ (রাযিঃ) তাতে মনে খুব কষ্ট পেলেন । তিনি রাসূল (সাঃ)-এর কাছে ছুটে এলেন এবং আরয করলেনঃ ইয়া রাসূলাল্লাহ! আমার মায়ের জন্য দু'আ করুন আল্লাহ তাআলা যেন তাকে হেদায়েত দান করেন। রাসূল (সাঃ) দুআ করলেন যে, হে আল্লাহ! আবু হুরায়রাহ-র মাকে হেদায়েত দান কর। আবূ হুরায়রা (রাযিঃ) আনন্দচিত্তে ঘরে ফিরে গেলেন। যেয়ে দেখলেন ঘর বন্ধ, ঘরের ভিতরে পানি পড়ার শব্দ হচ্ছে। মনে হল, যেন ভিতরে কেউ গোসল করছে। তাঁর মা তাঁর পায়ের শব্দ শুনে ভিতর থেকে বললেন : ওখানেই থাক ।
আরও জানুনঃ গর্ভবতী মায়ের খাবার তালিকা এবং গর্ভবতী মায়ের খাবার ?
আবূ হুরায়রাহ (রাযিঃ) সেখানেই দাঁড়িয়ে রইলেন । তাঁর মা
গোসল শেষ করে দরোজা খুললেন এবং উচ্চ স্বরে বলে মাকে কালেমা পাঠ করতে শুনে আনন্দের আতিশয্যে
হযরত আবূ হুরায়রাহ (রাযিঃ) কাঁদতে লাগলেন । এ অবস্থায়ই তিনি রাসূল (সাঃ)-এর কাছে
ছুটে গেলেন । রাসূল (সাঃ)কে পুরো ঘটনা শোনালেন। রাসূল (সাঃ) শোকর আদায় করলেন । হযরত
আবূ হুরায়রাহ (রাযিঃ) বললেন : ইয়া রাসূলাল্লাহ R! আল্লাহ্র কাছে দুআ করে দিন মুসলমানদের
সাথে যেন আমাদের ভালবাসা হয়ে যায় এবং আমাদের মা ছেলে উভয়ের সাথেও যেন মুসলমানদের
ভালবাসা হয়ে যায় । রাসূল (সাঃ) তা-ই দুআ করে দিলেন ।
আরও জানুনঃ ডায়াবেটিস কি ? ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করার উপায় বা ডায়াবেটিস কমানোর উপায় ?
ফায়দা : এই
হল নেক সন্তানের ফায়দা। নেক সন্তান মাতা-পিতাকে সত্যের দিকে, নেক আমলের দিকে এবং জান্নাতের
দিকে নিয়ে যায়। তাই নিজেদের সন্তানদেরকে নেক বানানোর চেষ্টা করা উচিত, তাদেরকে দ্বীনী
ইল্ম শিক্ষা দেয়া উচিত। তাহলে তাদের দ্বারা নিজেরাও উপকৃত হওয়া যাবে ।
হযরত হুযাইফা (রাযিঃ)-এর মা মায়ের ইসলাম গ্রহণ ?
হযরত হুযাইফা
(রাযিঃ)-এর মা
হযরত হুযাইফা (রাযিঃ) রাসূল (সাঃ)-এর একজন বিশিষ্ট সাহাবী । তিনি বলেনঃ একদিন আমার মা আমাকে জিজ্ঞাসা করলেন : তুমি হুযুর (সাঃ)-এর ওখানে যাও না কতদিন হল ? আমি বললাম, এত দিন। তিনি আমাকে খুব বকাঝকা করলেন । আমি বললাম : আজ যাব এবং মাগরিবের নামাযও হুযূর (সাঃ)-এর সাথে পড়ব এবং বলব তিনি যেন তোমার এবং আমার জন্যে ক্ষমার দু'আ করে দেন। কথামত আমি গেলাম এবং মাগরিবের নামায পড়লাম। ইশার নামাযও পড়লাম। ইশার পর রাসূল (সাঃ) যখন রওনা হলেন আমিও সঙ্গে সঙ্গে যেতে লাগলাম। আমার পায়ের শব্দ শুনে রাসূল (সাঃ) বললেন : হুযাইফা! আমি বললাম : জী ইয়া রাসূলাল্লাহ ! রাসূল (সাঃ) বললেন : কোন প্রয়োজন আছে কি ? আল্লাহ তাআলা তোমাকে এবং তোমার মাকে ক্ষমা করুন।
আরও জানুন: পলিসিস্টিক ওভারি সিনড্রোম কি ? পলিসিস্টিক ওভারি সিনড্রোম লক্ষণ ?
ফায়দা
: এখানে লক্ষ্যণীয় বিষয় হল কত নেককার
মা ছিলেন তিনি নিজের সন্তানের
ব্যাপারে এ বিষয়টাও খেয়াল
রাখতেন যে, রাসূল (সাঃ)-এর 'সোহবতে ঠিক
মত যায় কিনা। আমাদেরও
উচিত সন্তানদেরকে বুযুর্গ আলেম উলামার খেদমতে
পাঠানো। তাহলে তাদের সোহবতে গিয়ে সন্তানরা বরকত হাসেল করতে
পারবে। সন্তানদেরকে ভাল লোকের সোহবতে
পাঠালে সন্তানরা ভাল হবে, আর
খারাপ লোকের সংস্পর্শে পাঠালে তারা খারাপ হবে
।
হযরত মুআবিয়া (রাযিঃ)-এর মা মায়ের ইসলাম গ্রহণ ?
হযরত
মুআবিয়া (রাযিঃ)-এর মা
হযরত
মুআবিয়া (রাযিঃ) হলেন নবী কারীম
(সাঃ)-এর একজন বিশিষ্ট
সাহাবী এবং তাঁর শ্যালক।
হযরত মুআবিয়া (রাযিঃ)-এর মা হলেন
হযরত হিন্দ বিনতে উত্সা। এই হযরত হিন্দ
বিনতে উতবা একবার নবী
কারীম (সাঃ)-এর কাছে
আরয করলেন যে, ইয়া রাসূলাল্লাহ!
ইসলাম গ্রহণ করার পূর্বে তো
আমার অবস্থা এই ছিল যে,
আমি সবচেয়ে বেশী আপনার ক্ষতি
এবং লাঞ্ছনা কামনা করতাম। আর ইসলাম গ্রহণ
করার পর আমার অবস্থা
এই হয়েছে যে, এখন আপনার
সম্মানই আমার কাছে সবচেয়ে
বেশী কাম্য । রাসূল
(সাঃ)
বললেন : আমার অবস্থাও তাই।
ফায়দা : এ ঘটনা থেকে বোঝা যায় কত সত্যবাদী নারী ছিলেন হযরত হিন্দ । অকপটে মনের সত্য কথাটা ব্যক্ত করেছেন। আরও বোঝা গেল নবী কারীম (সাঃ)কে তিনি কত বেশী ভালবাসতেন। আমাদেরও উচিত রাসূল (সাঃ)কে ভালবাসা এবং সত্য কথা অকপটে স্বীকার করা। তবে এখন রাসূল (সাঃ)কে ভালবাসার তরীকা হল রাসুল (সাঃ)-এর সুন্নাত এবং তাঁর আদর্শকে ভালবাসা। হাদীছেও বর্ণিত হয়েছে- রাসূল (সাঃ) বলেছেনঃ যে আমার সুন্নাতকে ভালবাসল সে আমাকে ভালবাসল
0 মন্তব্যসমূহ